Wednesday, March 6, 2019

এজেন্ডা ২১ (Agenda 21) : ইলুমিনাতির উদ্দেশ্য

এজেন্ডা ২১ (Agenda 21) : ইলুমিনাতির উদ্দেশ্য

এজেন্ডা ২১ (Agenda 21)  কি? ইলুমিনাতির সাথে এর সম্পর্ক আছে কি? এজেন্ডা ২১ (Agenda 21) ও ডিপপুলেশন এজেন্ডা কি একই? এসব নিয়েই থাকছে নিম্নোক্ত আলোচনা।
এজেন্ডা ২১ নামে জাতিসংঘের একটি প্রজেক্ট রয়েছে। যাকে অনেকে  ডিপপুলশন এজেন্ডা বা জনসংখ্যা নিরোধন এর সাথেও মিলিয়ে দেখে!

এজেন্ডা ২১ আসলে কি?

 এজেন্ডা ২১ হল একটি প্রোগ্রাম যা জাতিসংঘ বাস্তবায়ন করতে চায়। এর উদ্দেশ্য রয়েছে কিছু। যেমন,  ১. নিয়ন্ত্রন (its about control). অর্থাৎ সমগ্র বিশ্বের মানুষদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসা। তারা কি করছে, দেখছে বা কি করবে সবকিছু নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসা। এটি এজেন্ডা ২১ ও New World Order উভয়ের নীতি। ২. ভূমি, সম্পদ ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন (control over land, resources and population control)।এখানে সরকারি ও ব্যক্তিগত ভূমি, সম্পদ ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ ব্যক্তিমালিকানায় থাকা জমিও এর অন্তর্গত। সম্পদ বলতে প্রাকৃতিক সম্পদের কথা বলা হয়েছে। অনেকের মতে এখানে বায়ু, পানি, খনিজ সম্পদ সবকিছুই নিয়ন্ত্রনের কথা বলা হয়েছে।
এজেন্ডা ২১ এর উদ্দেশ্য হিসেবে অনেক কিছুই বলা রয়েছে। যেখানে রয়েছে ব্যক্তিগত ঘর বিলোপ করে শরহকেন্দ্রিক আবাসন ঘরে তোলা। অর্থাৎ একটি ফ্ল্যাট বা এপার্টমেন্ট দেয়া হবে সবাইকে। আর এসব স্থানে নিয়ন্ত্রন থাকবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের। যার অর্থ, ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ন্ত্রন করা হবে।  এছাড়া শুল্ক বা ট্যাক্স বাড়ানো, সেই সাথে কঠোর আইন প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োগ ও এজেন্ডা ২১ এর উদ্দেশ্যের মধ্যে পড়ে। এছাড়া সর্বশেষ উদ্দেশ্য হল জনসংখ্যা হ্রাস করা।
 
এ অনুসারে জাতিসংঘ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন বা নিয়ম অনুসারে বিশ্বের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন করতে চাচ্ছে। জাতিসংঘের মত বিশ্বে মানুষের সংখ্যা বেশি। এত মানুষের “প্রয়োজন” নেই বিশ্বে। এসব মানুষ বরং বিশ্বের ক্ষতি করছে। এসব “অপ্রয়োজনীয়” নবায়ন অযোগ্য সম্পদ যেমন অক্সিজেন পেট্রোল ইত্যাদি নষ্ট করছে।  এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোন মানুষদের এ বিশ্বে প্রয়োজন নেই? ধনীদের? না গরীবদের?
CNN এর প্রতিষ্ঠাতা, মিলিয়নেয়ার টেড টারনার (Ted Turner)  নিজের একাধিক সাক্ষাতকার বা বক্তৃতা তে বৈশ্বিক উষ্ণতার (Global Warming) জন্য অধিক জনসখ্যা কে দায়ি করেছেন। তার মতে বেশি মানুষ বেশি সম্পদ ব্যবহার করছে! মানুষ কম হলে কম সম্পদ ব্যবহৃত হবে। যার ফলস্বরূপ বৈশ্বিক উষ্ণতা হবে না!
এমন কি রিক ওয়াল্টম্যান (Rick Oltman)। যিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, তিনিও জনসংখ্যা কমানোর কথা বলেছেন। উনি মনে করেন এত জনসংখ্যা মানুষের জীবন মান কমিয়ে দিয়েছে।অনেকের মতে এজেন্ডা ২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ৯৫ শতাংশ জনসংখ্যা হ্রাস করা হবে।
এদের একজন হলেন ডাক্তার ইমা লেবো (Dr Rima E Laibow. Medical Durector, Natural Solutions Foundation). উনি এক বক্তৃতাতে এ সংক্রান্ত তথ্য দেন। উনি বলেন ২০০২ সালে উনারা একটি “Advance Medical Pracctice” করছিলেন। যেখানে বিশ্বের অনেক উচ্চ পদস্থ (হাই প্রোফাইল) লোক আসতেন তাদের কাছে। তখন নাম প্রকাশ না করে এক মহিলার কথা বলেন যিনি একজন রাষ্ট্র প্রধান ছিলেন। অই মহিলা তাদের কাছে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন।অই মহিলা তাকে বলেছিলেন যে সময় এসে গেছে অপ্রয়োজনীয় মানুষদের মেরে ফেলা। বর্তমান বিশ্বের শুধু ৫-১০ শতাংশ মানুষদের শুধু প্রয়োজন। বাকি ৯০ শতাংশ মানুষ বিশ্বের অধিকাংশ নবায়ন অযোগ্য সম্পদ ধ্বংস করছে যার উপর বাকি ১০ শতাংশের অধিকার। এমনকি মার্কিন রাজনীতিবিদ হেনরি কিসিঞ্জার ও ডিপপুলেশন এর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
agenda-21, agenda-21-bangla
Hennry Kissinger-Agenda 21

এখন প্রশ্ন হল এই ডিপপুলেশন বা জনসংখ্যা হ্রাস হবে কিভাবে? এখানে ২ টি উপায় রয়েছে। এগুলো হল,          ১. খাদ্যের মাধ্যমে ২. স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে
এখন যখনি স্বাস্থ্যসেবা ও এজেন্ডা ২১ এর প্রসঙ্গ আসে, চলে আসে বিল গেটস এর নাম।
বিল গেটস বিশ্বে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এটা হয়ত আমরা সবাই জানি। কিন্তু এটা হয়ত অনেকেই জানি না যে, ২০১১ সালে বিল গেটস একটি পোলিও টিকা ক্যাম্পেইন চালান। যার কারনে প্রায় ৪৭০০০ শিশু আক্রান্ত হয় এবং অনেক শিশু মারাও যায়। বিল গেটস এর উপর ৩০০০০ শিশুর ওপর বেআইনি ভাবে টিকার পরীক্ষন করার অভিযোগ ও রয়েছে।  প্রশ্ন হলো বিল গেটস এসব কেন করছেন?
এর সম্ভাব্য কারন অনেকের মতে, তিনি নিজেও এজেন্ডা ২১ এর সাথে জড়িত!
agenda-21, agenda-21-Bangla
Bill Gates Agenda-21

আমরা অনেকেই জানি বিল গেটসের নিজস্ব একটি সংস্থা রয়েছে। যার নাম মিলেন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন  (Melinda Gates Foundation). এই ফাউন্ডেশন বিভিন্ন রোগের টিকা বানায় এবং তাদের পরীক্ষন করে। এমন একটি পরীক্ষনের জন্যই তাদের বিভিন্ন বার আদালতেও যেতে হয়। বিল গেটস ডিপপুলেশন বা জনসংখ্যা হ্রাসের নীতিতে বিশ্বাসি। উনার টেড টক্স (Ted Talks) এর একটি বক্তৃতা চলাকালীন সময় তিনি একমাত্র জনসংখ্যা কে বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ি করেন। আর এর প্রতিকারের একমাত্র উপায় হিসেবে জনসংখ্যা কমানোর কথা বলেন।

অথচ বৈশ্বিক উষ্ণতার সবচেয়ে বড় কারন হল কল-কারখানা বা মটর যান থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড। এই নীতিতে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের মতে কল-কারখানা বা মোটরযান নয়, একমাত্র মানুষ ই বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ি।  বিল গেটস সেই বক্তৃতা তে ভ্যাক্সিন বা টিকা তৈরী করে জনসংখ্যা কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেছেন। এমনকি বিল গেটস নিজেও বিভিন্ন সাক্ষাতকারে স্বীকার করেছেন যে তাদের বানানো ভ্যাক্সিন বা টিকা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাসে কাজ করছে। যদিও কোথাও তিনি ভ্যাক্সিনের মাধ্যমের শিশুদের হত্যার কথা বলেন নি।
এভাবে বিল গেটস ও এজেন্ডা ২১ এর বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন বলে অনেকের ধারনা! এখন এজেন্ডা ২১ কে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল ২০২০/২০২১ সাল নাগাদ। কিন্তু তা সম্ভন হবে না বিধায় ২০৩০ সাল নাগাদ পরিকল্পনা টি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারন করা হয়েছে। আর এর নাম দেয়া হয়েছে এজেন্ডা ২০৩০
কি? মনে হচ্ছে কথাগুলো অপ্রাসঙ্গিক? মনে হচ্ছে এমন কোন পরিকল্পনা গ্রহন ও বাস্তবায়ন করা সম্ভন নয়? তাহলে ইন্টারনেটে খুজে দেখতে পারেন। সার্চ করুন “agenda 2030 Babgladesh” যে অফিসিয়াল পেজটি পাবেন সেখাটি খুললেই দেখতে পাবেন এজেন্ডা ২০৩০ এর উদ্দেশ্য গুলি। টাইলস আকারে লেখা প্রতিটি লক্ষ্যের সাথে একটি চিত্র বা লোগো আকা আছে। যার অনেক গুলোই হল ইলুমিনাতির প্রচলিত লোগো বা চিহ্ন সমূহের অনুরূপ। চিহ্নগুলো হলো চোখ, সূর্য সহ আরো অনেক কিছু।
agenda-21, agenda-21-bangla

এভাবে এজেন্ডা ২১ বা এজেন্ডা ২০৩০ যে ইলুমিনাতির নতুন বিশ্বক্রম (New World Order) বাস্তবায়ন এর অংশ- তা অনেকেই বিশ্বাস করে।
এখন প্রাকৃতিক কারন ছাড়া মানুষ বা জনসখ্যা কমানোর আর কি কি উপায় হতে পারে তা ভাবার দায়িত্ব আপনাদের উপর ই ছেড়ে দিচ্ছি। আরো উদ্দেশ্য রয়েছে যা নিমোক্ত লিংক গুলোতে গিয়ে দেখতে পারেন।
এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ইলুমিনাতির উদ্দেশ্য ছিল নতুন বিশ্বক্রম (New World Order) প্রতিষ্ঠা। যেখানে বিশ্বের সব ক্ষমতা কিছুসংখ্যা মানুষের উপর থাকার কথা বলা হয়। আর ডিপপুলেশন বা জনসংখ্যা হ্রাসের কথা বলা হয়েছে। এখন সাদৃশ্যের বিষয় হল যে, বিভিন্ন সময় প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব দ্বারা নানা ভাবে উপরোক্ত দুটি বিষয়ের ই উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও ইলুমিনাতির অস্তিত্ব এখনো প্রশ্নবিদ্ধ, তবুও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী মানুষদের ইলুমিনাতির সদস্য হওয়ার প্রশ্ন উঠেছে। যদিও কেউ ই ইলুমিনাতির অস্তিত্ব প্রমান করতে পারে না; ইলুমিমাতির নিশ্চিহ্ন হওয়াও প্রমাণিত নয়।
এখন প্রশ্ন হল বিশ্বনেতারা কি আসলেই জনসংখ্যা হ্রাস করতে চান? মানুষ হত্যা ছাড়া তা কি আদৌ সম্ভব? এসব প্রশ্ন হয়ত প্রশ্নই রয়ে যাবে।




(উপরোক্ত লেখা লেখকের মস্তিষ্ক প্রসূত নয়। সকল তথ্য ইন্টারনেটে প্রাপ্ত জার্নাল, প্রামাণ্যচিত্র, ভিডিও থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রয়োজনে সহায়ক লিংক থেকে তথ্য যাচাই করে নেয়া যেতে পারে)



সহায়ক লিংক: Bill Gates on Ted Talks- https://www.youtube.com/watch?v=WUJMR3BUm2s
                         Dr. Rima Laibow- https://www.youtube.com/watch?v=mxLWZ…